মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ অপরাহ্ন
নরসিংদীর পলাশে আফিয়া আক্তার (১৬) নামে এক মাদরাসাছাত্রী হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের গজারিয়া বাজার এলাকায় এই হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত আফিয়া আক্তার গজারিয়া গ্রামের আজাহার মিয়ার মেয়ে। সে গজারিয়ার উলুম দাখিল মাদরাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
নিহতের পরিবারের দাবি, হত্যাকারীরা ওই মাদরাসাছাত্রীর ঘরের সিঁধ কেটে তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় তুলে নিয়ে হত্যা করে বাড়ির পাশে ফেলে রেখে গেছে। তবে আশপাশের বাড়ির লোকজন জানায়, প্রেমঘটিত ঘটনায় নিহতের পরিবারের লোকজনের দ্বারাই আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে আফিয়া। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের ভাই বোনসহ পাঁচজনকে থানায় নিয়ে গেছে।
নিহতের বাবা আজাহার মিয়া জানান, রাতে আফিয়া তার বড় দুই বোনের সঙ্গে রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়লে হত্যাকারীরা ঘরের সিঁধ কেটে ঘুমন্ত অবস্থায় আফিয়াকে তুলে নিয়ে হত্যা করে বাড়ির পাশে ফেলে যায়। পরে রাতে শোয়া অবস্থায় বোনরা তাকে বিছানায় না পেয়ে ঘরের সিঁধ কাটা দেখে বাইরে খোঁজাখুঁজি করে। একপর্যায়ে ঘরের পূর্ব পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় আফিয়াকে পড়ে থাকতে দেখে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আফিয়াকে মৃত ঘোষণা করে।
নিহতের পাশের বাড়ির প্রত্যক্ষদর্শী শাহিনুর নামে এক প্রতিবেশী জানান, আফিয়ার সঙ্গে পাশের গ্রামের রাসেল মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে প্রায় সময়ই আফিয়ার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার ঝগড়া হতো। মঙ্গলবার মধ্যরাতে হঠাৎ করে আফিয়ার চিৎকার শুনতে পাই। পরে ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির পাশে দেখি আফিয়ার দুই ভাই সাখাওয়াত ও আলম রক্তাক্ত অবস্থায় আফিয়াকে ধরাধরি করে ঘরের ভেতর নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় কি হয়েছে জিজ্ঞেস করলে তারা জানায় কিছুই হয়নি। এর কিছুক্ষণ পর একটি ভ্যান এনে আফিয়ার ভাইয়েরা তাকে ভ্যানে করে হাসপাতাল নিয়ে যায়। পরে সকালে জানতে পারি আফিয়া মারা গেছে।
হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহেদ আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের দুই ভাইসহ পাঁচজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের মাথায় ও গলায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বোনের প্রেমজনিত বিষয় নিয়ে ভাইদের সঙ্গে ঝগড়ার বিষয়টি শুনেছি। আবার নিহতের কথিত প্রেমিকের বিষয়টিও আমার আমলে নিয়েছি। যদিও সে সম্প্রতি বিয়ে করে ফেলেছে। হত্যার সার্বিক দিক বিবেচনা করে আপাতত নিহতের বড় দুই ভাই, দুই বোন ও বোন জামাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক কিংবা গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আশা করি খুব দ্রুত এই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটন হবে।